জামি'আ সিরাজুল উলুম ইব্রাহিমিয়াজামি'আ সিরাজুল উলুম ইব্রাহিমিয়া
জামি'আ সিরাজুল উলুম ইব্রাহিমিয়া

‘মাসনুন দোয়া ও দোয়ার হাকিকত’

নভেম্বর ০৪, ২০২৩Uncategorized
‘মাসনুন দোয়া ও দোয়ার হাকিকত’

মসনুন দোয়ার প্রতি মনোযোগী হোন:
অধিক হারে জিকিরের উদ্দেশ্য যে তরিকা দ্বারা হাসিল হয় তার মধ্যে একটি তরীকা হচ্ছে দোয়ায়ে মাসুরা বা কুরআন হাদিসে বর্ণিত দোয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়া।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি উত্তম তরিকা বলেছেন। সকাল সন্ধ্যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য তিনি একটি হলেও দোয়া নির্ধারণ করে দিয়েছেন। বলেছেন সকালে ঘুম থেকে জেগে এই দোয়া পড়বে, গোসলখানায় প্রবেশ করতে গিয়ে এই দোয়া পড়বে, বাহিরে বের হলে এই দোয়া পড়বে, ওজু করলে এই দোয়া পড়বে, ওজুর শেষে এই দোয়া পড়বে, মসজিদে প্রবেশ করতে এই দোয়া পড়বে, মসজিদ থেকে বের হতে এই দোয়া পড়বে, খানা সামনে আসলে এই দোয়া পড়বে, খানা শেষ হলে এই দোয়া পড়বে দস্তরখানা বিছানো হলে এই দোয়া পড়বে, এমনকি খানার শুরুতে দোয়া পড়তে ভুলে গেলে মধ্যখানে এই দোয়া পড়বে, ইত্যাদি। এভাবে তিনি নানা প্রকারের দোয়া শিখিয়েছেন।

দোয়ার অর্থই হলো আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক কায়েম করা:
দোয়া সমূহের নেপথ্যে অর্থের পৃথিবী বিরাজমান। সুতরাং দোয়া সমূহ একদিকে যেমন প্রতিক্রিয়াধর্মী অপরদিকে তেমন জীবনের বাঁকে বাঁকে নানা স্থানে বিভিন্ন দোয়া উল্লেখ করেছেন সুতরাং আপনি যদি কোন এক স্থানে বসে দোয়া করতে চান তাহলে কত দোয়া করবেন বলুন ? এক হাজারবার পাঁচ হাজারবার কিংবা এর চেয়ে বেশি, কত বেশি দশ হাজারবার করবেন ?কিন্তু এর থেকে ফারেগ হয়ে অন্য কাজে লিপ্ত হলে গাফেল হয়ে যাবেন, তাই আপনাকে জিকিরের এমন তরিকা অবলম্বন করবেন যাতে করে আপনি যে কাজ করবেন সে কাজের মধ্যেও জিকিরের উদ্দেশ্য নিহিত পাবেন। এমনকি আপনি যদি বায়তুল খালায় অর্থাৎ বাথরুমে যান সেখানেও জিকিরের উদ্দেশ্য লাভ হবে। যদি সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন জিকির কার্যকরী থাকবে তখনও। মোটকথা সব কাজে আল্লাহ্ তাআলা আপনাকে জিকিরের ফজিলত দান করছেন এবং এর মাধ্যমে আপনার সম্পর্ক আল্লাহ তায়ালার সাথে সুদৃঢ়করণ হচ্ছে।

জিকিরে জাবান তাজা রাখলে সম্পর্ক হবে দৃঢ়:
অভিজ্ঞতা বলছে, যে ব্যক্তি ঐসব দোয়া পড়ার অভ্যাস বানাবে যা কোরআন হাদিসে বর্ণিত, তার সম্পর্ক আল্লাহ তায়ালার সাথে সুদৃঢ় হবে। অবশ্য পরবর্তীতে এমন মনে হয় যে দোয়ার শব্দসমূহ যেহেতু মুখস্ত আছে, সেহেতু পড়ার সময় অর্থ ও মর্মের দিকে খেয়াল যায় না, এজন্য কোন কোন লোক মনে করে এভাবে দোয়া করার ফায়দা কি ? অটোমেটিক মেশিনে চলছে, জবান স্বয়ংক্রিয়ভাবে বলে চলেছে। অথচ মন কোথায়, দেমাগ কোথায় ? এজন্য এমন দোয়া অনর্থক। এই চিন্তাধারাটি ভুল। কেননা এ ধরনের দোয়ার মধ্যেও উপকারিতা নিহিত আছে।
কমপক্ষে আপনার জিব্বা ক্ষণিকের জন্য আল্লাহর জিকিরে মশগুল হইতেছে, আপনার একটি অঙ্গ আল্লাহর স্মরণে ব্রতী হওয়া এটা কম কিসের ? তবে এই দোয়া সমূহ যদি ধ্যান-খেয়ালের সঙ্গে পড়া হয় এর ফলে যে ফায়দা হবে এবং যে সম্পর্ক কায়েম হবে, তা আজিমুশশান ও সুবিশাল। মোটকথা দোয়ায়ে মাসুরা পড়া অধিক হারে জিকির করার দ্বিতীয় উপকরণ।

লোডিং হচ্ছে...